পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার
ড.জাকির নায়েক
প্রতি আল্লাহর দয়ায় নাযিলকৃত সর্বশেষ গ্রন্থ এবং শ্রেষ্ঠ অলৌকিকতা। তাহলে এই ধর্মীয় বিশ্বাসের যথার্থতা কতটুকু,আসুন তা জানা যাক।
পূর্বকালে মানুষ বিশ্বাস করতো পৃথিবী চ্যাপ্টা। পৃথিবীর কিনারা থেকে ছিটকে পড়ার ভয়ে শত শত বছর ধরে
মানুষ বেশি দূর পর্যন্ত ভ্রমন করতো না। স্যার ফ্রান্সিস ড্রেইক প্রথম ব্যক্তি যিনি ১৫৯৭ সালে পৃথিবীর চতুর্দিকে
নৌ-ভ্রমণের পর প্রমাণ করেছিলেন যে, পৃথিবী গোলাকার।দিন ও রাত্রির পরিবর্তন সম্পর্কে কুরআনের আয়াতটিকে বিবেচনা করা যাক-
الم تر ان الله يولج اليل في النهار ويولج النهار في البل
“তুমি কী দেখ না যে, আল্লাহ রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন, এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন?’
-সূরা লুকমানঃ ২৯
এখানে বলা হচ্ছে, রাত্রি ধীরে ধীরে ক্রমশ দিনে পরিবর্তিত হয় এবং অনুরূপভাবে দিনও ধীরে ধীরে ক্রমশরাত্রিতে পরিবর্তিত হয় । শুধুমাত্র পৃথিবী গোলাকার বলেই এই ঘটনা ঘটতে পারে। পৃথিবী চ্যাপ্টা হলে রাত্রি থেকেদিনে ও দিন থেকে রাত্রিতে একটা আকস্মিক পরিবর্তন ঘটে যেত।
অগভীর নক্ষত্র হচ্ছে গ্যাস ও ধূলিকণার ধূম্র ব্যাস প্রায় ৬০ আলোক বর্ষ । এটির (নক্ষত্রের) স্তূপের মধ্যে তুলনামূলক পূর্বেগঠিত উত্তপ্ত নক্ষত্রের অতি বেগুনী রশ্মির দ্বারা এটি সক্রিয় হয়। (Horizons, Exploring the Universe, Seeds, plates9, from Association of Universities for Research in Astronomy, Inc.)
জার্মানীর মেইনযে অবস্থিত জোহান্স গাটনবার্গ ইউনিভার্সিটির ইন্সটিটিউট অভ্ জিওসাইয়ান্সিস- এর ভূতত্ত্ববিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ও চেয়ারম্যান ড. আলফ্রেড ক্রোনার বিশ্বের প্রখ্যাত ভূতত্ত্ববিদ। তিনি বলেন, ‘মুহাম্মদ সাঃ যেখানে যে সময়ে জন্মগ্রহণ করেছিল… সে সম্পর্কে ভাবলে আমার মনে হয়, তাঁর পক্ষে বিশ্বের উৎপত্তির মত বিষয় সম্পর্কে
জানা সম্পূর্ণ অসম্ভব ছিল; কারণ খুবই জটিল ও অগ্রগামী পদ্ধতির মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা মাত্র গত কয়েক বছরের মধ্যে এ বিষয়গুলো জানতে পেরেছে।’ এছাড়া তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, ১৪০০ বছর পূর্বের কোন ব্যক্তি নিউক্লিয়ার ফিজিক্স সম্পর্কে কোনকিছুই জানত না, সে নিজের মন থেকে এ সম্পর্কে কোন তথ্য প্রকাশ করতে পারত না, যেমন- একই উৎস থেকে পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহের উৎপত্তি ইত্যাদি। (এই বর্ণনার জন্য তথ্যসূত্র হচ্ছে
‘এটাই সত্য’ নামক এক ভিডিও টেইপ।)
خلق السموات والأرض بالحق بكور البل على النهار – يكرر النهار على اليل .
“তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন যথাযথভাবে। তিনি রাত্রিকে দিবস দ্বারা আচ্ছাদিত করেন, এবং দিবসকে রাত্রি দ্বারা আচ্ছাদিত করেন।” -সূরা যুমারঃ ৫
এখানে আরবী শব্দ “,”” অর্থ ‘আচ্ছাদিত করা’ বা ‘কোন জিনিসকে প্যাঁচানো’- যেমনি মাথার চতুর্দিকে
পাগড়ী পেঁচানো হয়। দিন ও রাত্রির ‘আচ্ছাদিত করা’ বা ‘কুণ্ডলী পাকানোর’ ঘটনাটি শুধুমাত্র তখনই ঘটতে পারে যদি পৃথিবীটা গোলাকার হয় ।
পৃথিবীটা বলের মত পুরোপুরি গোলাকার নয় বরং ভূ-গোলকের মত, এটি মেরুর দিকে চ্যোপ্টা অর্থাৎ
মেরুকেন্দ্রিক চ্যাপ্টা। নিচের আয়াতটি পৃথিবীর আকারের একটা বর্ণনা ধারণ করে-
والأرض بـعـد ذالك دخـهـا
“এবং আল্লাহ পৃথিবীকে ডিম্বাকৃতি করে তৈরি করেছেন।” -সূরা আন-নাযিআতঃ ৩০
এখানে ডিমের জন্য ব্যবহৃত আরবী শব্দ হচ্ছে ১ (দাহাহা) ১, যার অর্থ একটি উটপাখির ডিম। একটি
উটপাখির ডিমের আকৃতি হচ্ছে পৃথিবীর ভূ-গোলকীয় আকৃতি সদৃশ। এভাবেই কুরআন পৃথিবীর আকৃতি সম্পর্কে।সঠিকভাবে বর্ণনা করে, যদিও কুরআন নাযিল হওয়ার সময়ে পৃথিবী চ্যাপ্টা হবার ধারনাটাই ব্যাপকভাবে সর্বত্র প্রচলিত ছিল।